প্রশাসন সংকটে, শৃঙ্খলা ফেরানোর বড় চ্যালেঞ্জ
০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম | আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম
একতরফা নির্বাচন থেকে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের পতন, নতুন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা। চলতি বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদি আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গভীর সংকটে পড়েছে প্রশাসন। গত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের সাজানো চরম দলীয় প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে বড় পরিবর্তন, পদোন্নতির হিড়িক, বঞ্চিত কর্মকর্তাদের নিরবচ্ছিন্ন দাবি-দাওয়ার আন্দোলন, অনভিজ্ঞতায় চরম বিশৃঙ্খল হয়ে ওঠে জনপ্রশাসন প্রশাসন। এরপর নানা পদক্ষেপে প্রশাসনে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সর্বশেষ জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের খসড়া প্রস্তাব ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে প্রশাসন। স্বাভাবিকভাবেই কাজে কর্মে নেমেছে স্থবিরতা। প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আগামী নতুন বছর প্রশাসনের সামনে সংকট কাটিয়ে গতি ফেরানোর কঠিন এবং সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৪ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঘটনাবহুল বছর। বছরটি ইতিহাসে জুলাই গণঅভ্যুত্থান এবং স্বৈরাচারের পতনের বছর হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর (কেপিআই) একটি। এখানে নজিরবিহীন এই ভয়াবহ আগুনের উৎস এখনো জানা যায়নি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম সচিবালয়ে গভীর রাতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে পাঁচটি মন্ত্রণালয়। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। এ কমিটি আজ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে জানানো হয়েছে।
এ দিকে গণঅভ্যুত্থানের সাড়ে চার মাসেরও বেশি সময়ে শৃঙ্খলা ফেরেনি প্রশাসনে। আগস্টের বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে উত্তরণে যতটুকু আশা জেগেছিল, তা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশের কারণে ভেস্তে গেছে। বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের আন্দোলনের ডামাডোলের মধ্যে শেষ হচ্ছে ২০২৪ সাল বলে মনে করছেন জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও আমলারা।
রাজনীতিবিদ ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কেউ কেউ এই আগুনের পেছনে ষড়যন্ত্র আছে বলে মনে করলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে না। এই অগ্নিকা-ের ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে গত বৃহস্পতিবার একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই সভায় ঘটনার তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে প্রধান করে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। ওইদিনই বিলুপ্ত হয় মন্ত্রিসভা। পরদিন ৬ আগস্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছে প্রেসিডেন্ট। এরপর গত ৮ আগস্ট শপথ নেয় ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেত্বত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নিয়োগ পান ১৬ জন উপদেষ্টা। পরে দুই দফায় আরো সাতজন উপদেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারে যুক্ত হন।
বঞ্চিতদের দাবিতে নাজেহাল সরকার : গণঅভ্যুত্থানের পর সুযোগ বুঝে অনেকেই অযৌক্তিক দাবি-দাওয়া তুলেছেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি-দাওয়ার আন্দোলন মোকাবিলায় নাজেহাল হতে হয়েছে সরকারকে। ডিসি নিয়োগ নিয়ে সচিবালয়ে নজিরবিহীন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন কর্মকর্তারা। তারা হাতাহাতিতেও জড়ান। তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও উদ্যোগ নেয়া হয়। জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ নিয়ে হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলা করায় ১৭ জন উপসচিবকে শাস্তির সুপারিশ করে এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি। দাবি আদায়ে আনসার কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের সচিবালয় ঘেরাও করে রাখার কর্মসূচির মুখোমুখিও হতে হয়েছে প্রশাসনকে।
গত ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ আমলে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের বঞ্চনা নিরসনে সাবেক অর্থসচিব ও বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের বিকল্প নির্বাহী জাকির আহমেদ খানকে আহ্বায়ক করে গত ১৬ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে সরকার। আওয়ামী লীগ আমলে বঞ্চিত দাবি করে এক হাজার ৫৪০ জন এ কমিটির কাছে আবেদন করেন। এর মধ্যে ৭৬৪ জনকে উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতির সুপারিশ করেছে কমিটি। এর মধ্যে সচিব পদে ১১৯ জন, গ্রেড-১ (সচিব মর্যাদা) পদে ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্মসচিব পদে ৭২ জন এবং উপসচিব পদে ৪ জন কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি প্রদান করা যেতে পারে বলে কমিটির সুপারিশে উল্লেখ করে। চলতি ২৪ ডিসেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রক্রিয়া চলমান থাকার সময় এ বঞ্চিত কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন সচিবকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন, তাদের তোপের মুখেও পড়তে হয়েছে তাকে।
সংস্কার কমিশনের খসড়া সুপারিশ ঘিরে প্রশাসনে উত্তাল : গত ৩ অক্টোবর আট সদস্যের জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এ কমিশনের প্রধান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন ব্যবস্থা করে তুলতে এ কমিশন গঠন করা হয়। ৯০ দিনের (৩ মাস) মধ্যে প্রস্তুত করা প্রতিবেদন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাজে হস্তান্তর করবেন। গত ১৭ ডিসেম্বর সচিবালয় বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, উপসচিব পুলে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা রেখে অন্যান্য ২৫টি ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ পরীক্ষার ভিত্তিতে নিয়োগ এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারকে সিভিল সার্ভিস হতে আলাদা করার সুপারিশ করা হবে। বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডারের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেয়া হয়। সংস্কার কমিশনের এ খসড়া প্রস্তাব ঘিরে প্রশাসন উত্তাল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে প্রশাসনের প্রভাবশালী প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন। প্রশাসন ছাড়া বাকি ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারাও এর বিরোধিতা করছেন। বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তারা এর প্রতিবাদ জানিয়ে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার দাবি জানিয়েছেন। উপসচিব পদে পদোন্নতির কোটা কমানোর প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ৬৪ জেলার ডিসি। কমিশনের সুপারিশের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’। পরিষদ কর্মবিরতি, মানববন্ধনের সঙ্গে সমাবেশের ডাক দিয়েছে। প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনও (বিএএসএ) আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে। গত ২২ ডিসেম্বর প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা নজিরবিহীনভাবে সচিবালয়ে জমায়েত করেছেন। ২৫ ডিসেম্বর প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে তারা কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান ইনকিলাবকে বলেন, সংস্কারের এ বিষয়গুলো এ মুহূর্তে কী খুব দরকারি ছিল? এখন নির্বাচন নিয়ে লোকজন ব্যতিব্যস্ত। নির্বাচন কবে হবে, কীভাবে নির্বাচনটাকে সুন্দর করা যায়। ভয়হীনভাবে মানুষ ভোট দিতে পারবে। এটা হলো মূল। এখন এটা মূল এজেন্ডা নয়। তিনি বলেন, ‘সংস্কার প্রয়োজন আমরা ৫৪ বছরে কোনো সংস্কার আনিনি। তবে এটা চলমান প্রক্রিয়া। দেড়-দুই বছরের মধ্যে এ সরকার সব সংস্কার করে ফেলবেন এটা ভাবার কোনো কারণ নেই।
প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরানোর বড় চ্যালেঞ্জ : প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন বছরে (২০২৫ সাল) প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরানোই হবে সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ। বিগত কয়েক মাসের অভিজ্ঞতার আলোকে সতর্কতার সাথে পদক্ষেপ ফেলতে হবে। যাতে নতুন করে কোনো বিতর্কের সৃষ্টি হতে না পারে। দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনেই সময় কাটছে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের। নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেয়া তো দূরের কথা। রুটিন কাজও ঠিকভাবে চালিয়ে নেয়া যাচ্ছে না। বিঘিœত হচ্ছে সেবা প্রদান প্রক্রিয়া। শিগগিরই এ অবস্থা থেকে উত্তরণ করা না গেলে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থার সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংকটেও নতুন উদ্যোগ : গণঅভ্যুত্থানের পর নানা সংকটের মধ্যদিয়ে প্রশাসন এগোলেও এর মধ্যে কিছু ইতিবাচক উদ্যোগ এসেছে। চাকরিপ্রার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হয়েছে। সর্বোচ্চ বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩২ বছর করে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে সরকার। গত ১৮ নভেম্বর ‘সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যানসিয়াল কর্পোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ২০২৪’ জারি করা হয়। এতদিন সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সাধারণ প্রার্থীদের সর্বোচ্চ বয়স ৩০ এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটার প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩২ বছর ছিল। এছাড়া বিসিএসসহ সব ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষার আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ১১ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা, ২০১৪’ সংশোধন করা হয়। একই সঙ্গে বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০ থেকে কমিয়ে ১০০ করা হয়েছে। এখন থেকে বিসিএসে ১০০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে, আগে ১১০০ নম্বরের পরীক্ষা হতো। দেশের সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদের হিসাব দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতি বছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে হবে। একই সঙ্গে উপদেষ্টাদেরও সম্পদের হিসাব দিতে হবে। এজন্য একটি নীতিমালাও করা হয়েছে।
প্রশাসন ভেঙ্গে নতুন গড়ার স্বপ্ন : অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকারের আস্থাভাজন ও গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে থাকা কর্মকর্তাদের সরিয়ে দিয়েছে। এখনও সেই প্রক্রিয়া চলছে। তাদের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে, পাঠানো হয়েছে বাধ্যতামূলক অবসরে, পদায়ন করা হচ্ছে কম গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত সাড়ে চার মাসে জনপ্রশাসনে প্রায় সাড়ে ৫০০ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে শতাধিক কর্মকর্তার। ওএসডিও করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তাকে। তাদের স্থলে অবসরে যাওয়া অনেক কর্মকর্তাকে চুক্তিতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী বলছে, সাড়ে চার মাসে ২৩ জন কর্মকর্তাকে সচিব করা হয়েছে। ১৭ জন কর্মকর্তা গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। অতিরিক্ত সচিব ১৩৫, যুগ্ম-সচিব ২২৮ এবং উপসচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ১৩৪ জন। ১৪টি মন্ত্রণালয়ে সচিব নিয়োগ দেয়া হয়েছে চুক্তিতে। আন্দোলনের মুখে তড়িঘড়ি করে পদোন্নতি ও পদায়ন করতে নানা ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতি হচ্ছে। অনিয়মে অভিযুক্ত কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়েছেন। বিতর্কিত কর্মকর্তাদের সচিব কিংবা জেলা প্রশাসকের (ডিসি) মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে, যা সমালোচনার সৃষ্টি করছে। এজন্য ভুলগুলো শুধরে বারবার সিদ্ধান্ত বদলাতে দেখা যাচ্ছে। নীতি-নির্ধারণী পদের কর্মকর্তাদের অনভিজ্ঞতা সংকটকে আরো গভীর করেছে। কারণ যাদের চুক্তিতে প্রশাসনের শীর্ষ পদগুলোতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, তারা অনেক দিন ধরে চাকরির বাইরে। তাই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে হোঁচট খেতে হচ্ছে। অন্যদিকে চুক্তিতে নিয়োগ দেয়ায় পদোন্নতি যোগ্য কর্মকর্তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। তাদের মধ্যে হতাশ ও ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। খাদ্য সচিব, নৌ-সচিবসহ বেশ অনেকগুলো পদে কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়ার পরপরই সেই নিয়োগ বাতিল করতে হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ না দেয়ার কারণে এভাবে সিদ্ধান্ত বদলাতে হচ্ছে বারবার। এখনো স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দফতর সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদ খালি রয়েছে। এছাড়া ডিসি নিয়োগকে কেন্দ্র করে বিপুল অর্থের লেনদেনের অভিযোগ করে গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। অর্থ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমানের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে তিন উপদেষ্টাকে নিয়ে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। যদিও কমিটি সিনিয়র সচিবের অর্থ লেনদেনে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পায়নি বলে জানা গেছে।
গভীর রাতে ভয়াবহ আগুনে পুড়েছে পাঁচটি মন্ত্রণালয় : প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে গভীর রাতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে পাঁচটি মন্ত্রণালয়। গত বুধবার দিবাগত রাত প্রায় দুইটার দিকে নয়তলা একটি ভবনে লাগা এই আগুন ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের টানা ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ভবনটির চারটি তলায় অবস্থিত স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও সেতু, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র, কম্পিউটার ও আসবাব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন নেভানোর কাজ করতে গিয়ে ট্রাকচাপায় মো. সোহানুর জামান নামে ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য নিহত হয়েছেন। কমিটিতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের প্রধানকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। এর আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। পরে এই কমিটি বাতিল করা হয়। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় পৃথক কমিটি করেছে। এসব কমিটির বড় কাজ হবে ক্ষতি নিরূপণ করা।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
নাঈমুল ইসলাম ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব ১৬৩টি, জমা ৩৮৬ কোটি
সবার ঐক্যমতে দ্রুতই হবে ডাকসু নির্বাচন : ঢাবি ভিসি
ডলার বেচাকেনায় ব্যবধান ১ টাকার বেশি নয়
আবুবকর সরকার সভাপতি তুহিন হোসেন সাধারণ সম্পাদক
পীর ইয়ামেনী মসজিদের ইমাম মাওলানা এমদাদুলের ইন্তেকাল
খতমে নবুওয়ত না মানলে ঈমান থাকবে না
সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে অহেতুক বিতর্ক না করে দ্রুত নির্বাচন দিন
পান্থকুঞ্জে গাছ রক্ষা আন্দোলনকারীদের প্রতিবাদ সমাবেশ
রেলপথে দুর্ঘটনা এড়াতে বাড়তি সতর্কতা
ডায়াবেটিস রোগীদের নিরাপদে রোজা রাখার উপায় জানালো এসিইডিবি
রাজনীতিতে অশুভ বিভাজনের পদধ্বনির আভাস পাওয়া যাচ্ছে
২ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের নিলাম মঙ্গলবার
ঢাবি আইবিএ’র বিবিএ প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
দিন-দুপুরে ধানমন্ডির সীমান্ত স্কয়ারে স্বর্ণের দোকানে চুরি
হাসিনাকে নিয়ে হাটে হাঁড়ি ভাঙলেন সোহেল তাজ
সংস্কার এবং নির্বাচন নিয়ে ঝগড়া বন্ধ করুন: মজিবুর রহমান মঞ্জু
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের মেয়াদ ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে
পাঠ্যবইয়ে হান্নান-সেজানের সাহসিকতার গল্প
সিলেট সীমান্তে ১ বছরে ৭ বাংলাদেশিকে হত্যা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনুষ্ঠিত হল হাফ ম্যারাথন